Advertisement

পরীমণি এর প্রেমে পড়েছিলাম


পরীমণি এর প্রেমে পড়েছিলাম চিঠির মতো মায়ান পরীমণি পেন এবং পেন নামে পরিচিতঅনার্স করার পর গ্রামেই থাকার শখ গ্রামের সরলতায় বাঁধতে আমি এটা করেছি। বিনিময়ে কী চমৎকার অনুভূতি অপেক্ষা করছে তা আমি খুব আকু দাদি মাসালাম গার্ডেন এনগুঙ্গি গাও সেদেরা দেশা ইনিটু।

দিনা মেঙ্গো আকু সেকোলাহ  দেশা। কোনো বোকাঃ-বোকা দেশা সকুপাট গুলা কাঁথি গেউঙ্গাহে দ্বে-ধেউ। ওরা লেট সুয়ে আকু দাদি পপুলার ব্যাঙ্গেট করো বিয়াসা  দেশা ইনিটু। এটি একটি বার্তা একটি বই কলম বই এবং গাড়ি এক সুতোয় আবদ্ধ।

গ্রামের কিছু লোক আমাকে তাদের কাছে একটি বার্তা লিখতে বলে কারণ তারা মনে করে যে তারা বিষয়গুলি জানে। আমিও এটা পছন্দ করি। আমি আগের চেয়ে বেশি লিখতে উপভোগ করি আমি পড়তে চাই কী আকাঙ্ক্ষা হিংসা আর ভালোবাসায় ঘেরা চিঠি মাঝে মাঝে কাজ আমার শখ হয়ে ওঠে।

আমি একজন সাধারণ লেখক হয়ে উঠলাম মানুষের চিন্তায় পড়র যে আনন্দ পড়ার আনন্দ তা প্রকাশ করা যায় না। দিনটা কেমন গেছে তোমার একদিন বিকেলের অপরূপ সৌন্দর্যে খালের পাড়ে বসে আছি। জোয়ারের স্রোতে খালের পানি উপচে পড়ে। জলের ঘট ঘাস ছুঁয়ে আমার আমার মন যায়।

সেই শরতের বিকেলে কেউ একজন খুব ধীরে ধীরে এসে আমার পাশে বসল। পাশে তাকাতেই একটু ভয় পেলাম। লাল এবং হলুদ কম্বিনেশনের শাড়ি পরা যুবতীকে আমার কাছে মিষ্টি হলুদ পাখির মতো লাগছিল।আমার দিকে একটা খাম এগিয়ে দিয়ে বললএই চিটিডা ইট্টু পইড়ে শোনাইবেন।

আমার মনে হলো বহুজন বহুবার এই একই কথা বলেছে কিন্তু এমন করে কেউ কক্ষনও বলেনি কেউ না আমি বললাম হুম শুনাবো। কই দেখি চিঠিটাপরদিন সে যখন এলো চিঠিটা তখন আমার বুকপকেটে খুব গোপনে আগলে রাখা যেমন করে আগলে রাখি তাকে ঘেরা অনুভূতি সে বলল।

মাস্টার আজ কিন্তু এমনি আসছি ওই দিক যাইবা ওইযে জারুল গাছটার নিচে ততোদিনে আমাদের সম্বোধন তুমিতে এসে ঠেকেছে।আমি বললাম যাব। চলো।মরা জারুল তলায় বসলাম। একটা জারুল ফুল ছিড়ে মেয়েটা তার বেনীতে গাঁথল এতো মনোরম হয় বেনীতে গাঁথা জারুল।

আমি জারুলের প্রেমে পড়লাম এবং তাঁর বারবার বারংবার নিতু বলল আচ্ছা বলো তো মাস্টার ফুল সুন্দর নাকি মানুষ আমি বললাম ঠিক বুঝলো না বোকা মেয়ে একটা বললাম তোমার একটা চিঠি আমার কাছে আছে নিবা না।

তোমার কাছে কেমনে কই দেখি আমি চিঠিটা বুকপকেট থেকে বের করে ওর হাতে দিলাম। ও কিছুক্ষণ নেড়েচেরে বিস্ময় নিয়ে বলল পড়ে শোনাও তো মাস্টার আমি একবার ওর দিকে তাকালাম ল্যাপ্টানো কাজল চোখে ভ্রুর পাশের কালো তিলটায় আর ফুলের মতো মুখটায়।

আমার হৃদস্পন্দন কি ভয়ানক ভাবে বেড়ে গেল। নিশ্বাস আটকে মরে যাওয়ার মতো রুদ্ধশ্বাস অনুভূতি ইশশ, প্রেমে পড়া এত কঠিন আমি পড়তে আরম্ভ করলাম প্রিয়দর্শিনী রুদ্ধশ্বাস মায়া বোঝ দীঘির জলের ছাঁয়া মায়া জরানো কায়া বোঝ তোমায় দেখি মায়া দেখি চোখের জ্বালা দেখ।

মন পুঁড়ে যায় প্রাণ পুঁড়ে যায় বলো তুমি বোঝনদীর পারে তোমার পায়েল আওয়াজ তোলে কেন সে কি জানে একটা মানুষ কেমন করে মরেবাঁচে যেন এরপরে আর অমন করে চুল বেঁধো না চোখে ধাঁধিয়ে যায় আর দিও না অমন কাজল লেপ্টে যখন যায় আর পড়ো না অমন পায়েল খুলেই যখন যায়।

আর হইয়ো অমন মায়ার মন হারিয়ে যায় আমি চিঠি বন্ধ করে ওর দিকে চাইলাম ও চেয়ে আছে উদাস হয়ে। করুন হয়ে আমায় কইল এত কঠিন ভাষা ও মাস্টার! আমি তো কিছু বুঝি নাই। কিন্তু কেমন যেন আপন আপন কে দিছে এই চিঠিখানা।

আমায় একটু বুঝায়ে দিবা আমি বললাম আমায় বোঝো আমার কথা ও বলল বুঝি তো।আমি বললাম তবেই হবে। এখন চলো।আমার চিঠির প্রেম ওখানে শুরু। এরপর যখন যখন ইচ্ছে হতো তখন তখন লিখতাম।


কখনো বা না লিখেই মুখে বলতাম ও ভাবতো কাগজ দেখে বলছি আসলে তো না নয়। আমি ওঁকে পড়ি, ভাঙি-গড়ি।আমি জানি না ও বুঝে গিয়েছিল কিনা৷ কিন্তু এরপর আর কখনো জানতে চায়নি কে লিখে এই সেবার একটা কাজে ঢাকা গিয়ে আমায় অনেকদিন থাকতে হলো। 

প্রায় মাসখানেক নিতুকে না বলেই হুট করে যেত হলো। নিতুর প্রতি আমার কঠিন প্রেমের এক দারুন উপলব্ধির সময় ছিল তা। কাছে না থেকেও কথা না বলেও প্রতিমুহূর্তে কেমন করে মনের খুব নিকটে রাখা যায় তা বুঝেছিলাম। 

গ্রামে ফিরলাম যেদিন সেদিনই ও আমার কাছে ছুটে এলো। আসমান থেকে নেমে আসা পরী মনে হলো। একজন দুঃখী পরী ক্লান্ত অসহায় নির্জিব মুখের সেই মেয়েটা সেদিন জানান দিল তার মনে আমার আমায় বলল ও মাস্টার।

আমায় একটা চিঠি লেইখা দিবা আজআমি সুধালাম আগে কও কেমন আছো মেয়েটা বলল ভালো নাই। একটুও ভালো নাই মাস্টার তুমি অত দূরে আর যাইও না। দিবা কও লেইখা একটা চিঠি ললাম দিব তো। কার কাছে বলল তাঁর কাছে কী লিখবো কও আমরা সেই জারুলের নিচে গেলাম। 

যেখানে আমাদের চিঠি প্রেমের শুরু!বসলাম আমি বসলো সেও।চোখের পাশে উড়ে আসা অগোছালো ছন্নছাড়া চুল গুলো সরাতেই হাতের চুরি ঝুমঝুমিয়ে নিচে নেমে এলো। গাছের সাথে হেলান দিয়ে আমার দেয়া চুরি খুললো নূপুর খুলল টিপ খুললো চোখের কাজল মুছে নিল চুল গুলো সব খুলে নিল। 

আমি দেখি মরি সেই মেয়েটা ছন্দের মতো কইতে লাগলো তাঁরে তুমি বইলা দিও দেই না তো তাঁরে ব্যাথা আমার জনম সুখ তারে দেই বিনিময়ে চাই কথা ক্যান হারাইলো ক্যান পালাইলো দিয়ে এমন ব্যাথা তারে তুমি বইলা দিও আমার মনের কথা বিনিময়ে কিচ্ছু চাই না চাই শুধু তার কথা। 

চুরি চাই না নূপুর চাই না যাইমু নির্বাসনে তাঁরে যদি না পাই মনে না পাই গো মোর সন শুনলা মাস্টার? তারে তুমি কইয়া দিও আমার সকল কথা সে যেন আর না ছাইড়ে যায় না দেয় মোরে ব্যথা। পরের শুক্রবার আমাদের বিয়ে হলো। 

আমার হুট করেই মনে হয়েছি ওঁকে আমার লাগবেই, ওঁকে আমার চাই আমার প্রিয়দর্শিনী সেই প্রথম দিনের মতো সুন্দর স্বচ্ছ কোমল। আমি তাঁরে কইলাম আর কখনো অমন করে কাঁদবা না। দহন দেখ মনের দহন দেখ না আর কখনো অমন করে কাঁদবা না।

আমার ফুল আমার পরী আমার প্রিয়দর্শিনী আমার নিষেধ অমান্য করে সেদিনও কাঁদল।বুকের মধ্যিখানে মাথা রেখে কইল আগে কও আমায় রেখে একলা ককর অমন করে আর যাইবা না আগে কও আমায় তুমি কাগজে কথা কওয়া কোনোদিনও থামাইবা না আমি তারে কথা দিলাম তার কথা অক্ষরে অক্ষরে মান্য করলাম।

রোজ রাতে তার মান ভাঙাতে আস্ত একটা চিঠি লিখতাম কিংবা লিখতাম প্রেম চিঠির প্রেম। আমি তারে পড়ে শোনাই সে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে আমি ডাকি এই বোকা মেয়ে কাঁদিস কেন সে আমায় জড়িয়ে ধরে। 

আপন করে কয় আমি জানি না সত্যি কইলাম আমি জানি না একটু কাঁদি একটুখানি এরপরে তো আমার ঘরে ছেলে এলো মেয়ে এলো আমার বউটা কুড়ি থেকে বুড়ি হলো। চিঠির প্রেম কেন যেন কোনোদিনও পুরোনো হলো না আমি আজও প্রেমে পড়ি নতুন রঙে নতুন ঢঙে। আমার প্রেম চিঠির প্রেম মনের প্রেম টানের প্রেম। আর ফুল নিলে নেন। 

নাইলে আমারে ছাড়েন আমি যাই।'চন্দ্রিমা উদ্যানের লেক পারে পিচ্চি মেয়েটা ফুল বিক্রি করে৷ আমি তাকে কাছে ডেকে আদর করে এটা-সেটা জিজ্ঞাসা করলাম৷ কিন্তু মেয়েটা এক টানে আমার থেকে তার হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে দৌড়ে চলে গেলো৷ 

সাধারণত পথশিশুরা কারো একটু আদর পেলেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। কিন্তু এই মেয়েটা খুশি হওয়ার বদলে বিরক্ত হয়ে চলে গেলো। অবশ্য মেয়েটা বিরক্ত হয়েছে না রেগে গেছে বুঝতে পারিনি৷ মেয়েটার এরূপ আচরণে আমার অবাক হওয়ার কথা ছিলো৷ 

কিন্তু আমি অবাক হইনি। কারণ এটার সাথে আমি পরিচিত। আমার চেহারায় মনে হয় ভয়ংকর একটা ভাব আছে৷ কোনো পিচ্চিকে আদর করতে নিলেই পিচ্চিগুলা বিরক্ত হয়। রেগে যায়৷ মেয়েটার যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে ছিলাম৷ 

ঠিক তখনি একটা মেয়ে আমার পাশে এসে বসলো। তার দিকে তাকাতেই মেয়েটা বলে উঠলো আপনাকে তো বিভিন্ন জায়গায় একা একা বসে থাকতে দেখি৷ বন্ধু-বান্ধব নেই নাকিআপনি মনে হয় মানুষ হিসেবে খুব বিরক্তিকর কেন আপনার এমন হচ্ছে কেনো তেমন কোনো কারণ নেই। 

তবে আপনাকে আগেও কয়েকবার দেখেছি। পথশিশুদের সাথে কথা বলেন৷ তাদের আদর করেন। যারা প্রচন্ড একা। তারাই এমনটা করে। কিন্তু তারা আপনার উপর বিরক্ত হয়।আচ্ছা আমার দিকে তাকিয়ে দেখুন তো আমার চেহারায় কি কোনো ভয়ংকর ভাব আছে মেয়েটা আমার দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে রইলো না ভয়ংকর ভাব নেই। 

তবে পিশাচ পিশাচ একটা ভাব আছে। বলে খিলখিল করে হেঁসে ওঠে মজা করলাম। কিছু মনে করবেন না। কিছু মনে করিনি। বুঝেছি আপনি মজা করেছেন। তবে সত্যটা হলো আপনার চেহারায় প্রচন্ড পরিমাণে ইনোসেন্ট একটা ভাব আছে। তাই হয়তো পিচ্চিগুলা বিরক্ত হয়। মেয়েটা হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল আমার নাম জারা। 

আজ উঠি পরে কখনো আবার দেখা হবে। মেয়েটা চলে গেলো। আমার জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে করলো আবার কবে কিভাবে দেখা হবে আমাদের কারো কাছেই তো কারো কন্টাক্ট নেই। কিন্তু আমি জিজ্ঞাসা করলাম না৷ জারা কিছু দূর গিয়ে আবার ফিরে এসে বলল আমি বাড়িয়ে দিলাম। সে তার নাম্বারে কল দিয়ে বলল এটা আমার নাম্বার। 

আর আপনার নাম্বারটা কি নামে সেভ করবো পিশাচ আমি হেঁসে বললাম আপনার ইচ্ছা হলে করতে পারেন।মেয়েটা সত্যি সত্যি পিশাচ নামে আমার নাম্বার সেভ করে নিলো।জারার সাথে আমার পরিচয় হয়েছে, প্রায় দু-মাস হয়ে গেছে৷ এ দুই মাসে একজন আরেকজনের খুব কাছে চলে গেলাম৷ 

আমরা চুটিয়ে প্রেম করতে লাগলাম। সে আমার জীবনের প্রথম নারী৷ তার জন্য আমি যতটা আকৃষ্ট৷ তার থেকে বেশী আকৃষ্ট তার দেহের জন্য। আমি বাজেভাবে সেক্সুয়ালি ফ্রাস্টেড। জারার সাথে প্রেম হওয়ার পর থেকেই কল্পনা করছি সেক্সুয়াল ফ্রাস্টেশনটা এখন হয়তো জারার মাধ্যমে কাটিয়ে উঠতে পারবো। 

কিন্তু জারা আমার ইঙ্গিতে সারা দিচ্ছে না৷ সরাসরি বলতেও পারছি না।জারার সাথে মনের প্রেম হলেও শরীরের প্রেম এখনো হয়নি। আমার দেহ শরীরের প্রেমের জন্য ব্যকুল হয়ে আছে। কিন্তু তিন মাস পার হয়ে গেলেও এখনো বলার সাহস করে উঠতে পারছি না৷

 একদিন মনে অনেক সাহস জমিয়ে বলেই দিলাম জারা আমি তোমার সাথে একান্ত কিছু মুহূর্ত কাটাতে চাই। ভণিতা করছো কেনো আমি কি বলতে চাচ্ছি তুমি বুঝতে পেরেছো। তারপরও কেন এতো ভণিতা আমি তোমার সাথে রাগ দেখাতে চাচ্ছিলাম না। 

তাই ভণিতা করে এড়িয়ে যাচ্ছি। বলেই জারা উঠে চলে গেলো। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার মনে হলো জারাকে সরাসরি এভাবে বলা ঠিক হয়নি৷ ওকে সরি বলা দরকার। আমি ফোন দেয়ার চিন্তা করছি৷ তখনি জারা ফোন দিয়ে বলল এখন দেখা করতে পারবে চন্দ্রিমায় গিয়েই দেখি জারা বসে আছে৷ 

আমি ওর পাশে গিয়ে বললাম জারা আই এম সরি কাল এভাবে বলা আমার উচিৎ হয়নি। তুমি কেন সরি বলছো৷ তুমি ঠিকই বলেছো৷ আমাদের এতোদিনের প্রেম। কিন্তু তোমাকে কখনো ভালোমতো একটা চুমুও দিতে দেইনি৷ আসলে আমারো ইচ্ছে করে আমরা কিছু করি৷ কিন্তু পরেই মনে হয়৷ 

তুমি যদি আমাকে বিয়ে না করো আমরা এই শহরে আমাদের ভালোবাসার মুহূর্ত কাটাবো না৷ এই শহরের বাইরে কোথাও ঘুরতে গিয়ে কাটাবো। এবং আমি যেখানে নিয়ে যাবো সেখানেই তোমার যেতে হবে। তোমার ঠিক করা যায়গায় নয়। দূরে কোথাও ঘুরতে যাবো। এটা কেন বলেছো বুঝলাম। 

কিন্তু আমার ঠিক করা জায়গায় যাবে না কেন সত্যি বলতে আমি মানসিকভাবে অসুস্থ৷ সাত বছর বয়সে আমার বাবা মারা যায়৷ তার দুই বছর পর মা আরেকটা বিয়ে করেন৷ আমার ঐ সৎ বাবার দ্বারা আমি সেক্সুয়াল এবিউজড হই৷ মাকে এই কথা বললে মা উল্টো আমাকে মারধর করতো। 

তারপর থেকে আমি আর কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না। মনে হয় সবাই আমার ক্ষতি করবে। এমনকি তোমাকেও করতে পারি না৷ তবে ভালোবাসি বলে বিশ্বাস করার চেষ্টা করি৷ তোমার সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করলে আমাকে ছেড়ে দিতে পারো৷ তাতে কোনো অসুবিধা নেই৷ 

কিন্তু ভিডিও করে রাখলে তা যদি ছড়িয়ে যায়৷ আমি মানুষকে মুখ দেখাতে পারবো না৷ এখন পর্ন সাইটে যত বাংলা পর্ন দেখবে তার প্রায় সবগুলোই তো এমন যে মেয়েটা ছেলেটাকে বিশ্বাস করেছে৷ কিন্তু ছেলেটা বিশ্বাস রাখেনি।আচ্ছা তোমার সৎ বাবা আর মায়ের কথা তো কখনো আমাকে বলোনি উনারাও মারা গেছেন। আমার পনেরো বছর বয়সে কার এক্সিডেন্টে মারা যান। তারপর আমি আমার দাদুর সাথে থাকতাম৷ উনিও দুয়েক বছর আগে মারা গেছেন। 

তারপর থেকে আমি বড্ড একা হয়ে গেছি।' জারার মন খারাপ হয়ে গেলো। আমি তাকে সান্ত্বনা দেয়ার কোনো ভাষা খুঁজে পেলাম না। তার হাতটা শক্ত করে ধরে বললাম মন খারাপ করো না। আমি আছি তোমরা পরদিন রওনা দিবো বলে ঠিক করা হলো। কোথায় যাবো সেটা জারা গোপণ রেখে বলল এটা সারপ্রাইইজ থাক। আমিও আর জানার জন্য জোর করিনি৷ এক জায়গায় গেলেই হলো। 

আমি চন্দ্রিমার পাশে দাঁড়িয়ে আছি৷ আমার সামনে একটা প্রাইভেটকার এসে থামলো৷ ভিতর থেকে জারা মাথা বের করে বলল উঠে পড়ো আমি উঠে বললাম এইটা কার গাড়ি আমার গাড়ি।জানতাম না তো তোমার গাড়ি আছে৷জানাইনি। তাই জানতে পারোনি তুমি তো বেশ রহস্যময়ী নারী।

তোমার সাথে এতো দিনের সম্পর্ক। কিন্তু তোমার ব্যাপারে কত কিছুই অজানা।ন্তব্যে পৌছাতে আমাদের প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো৷ বিশাল এক বাড়ির সামনে এসে জারা গাড়ি থামিয়েছে৷ যেখানে এসেছি সেখানে মানুষজন নাই বললেই চলে। বাড়ির সীমানার তিন পাশে খোলা মাঠ। আরেকপাশে বিশাল বিল। 

বিশাল সীমানা নিয়ে রাজপ্রাসাদের মতো একটা বাড়ি। এটা কি তোমার বাড়ি গাড়ি থেকে নেমেই জিজ্ঞাসা করলাম৷হ্যাঁ দাদুর সাথে এখানেই থাকতাম৷ দাদু মারা যাওয়ার পর এটার উত্তরাধিকারি একমাত্র আমিই। উনি মারা যাওয়ার পর এখানে আর তেমন আসি না। 

মাঝে মধ্যে এসে দু-তিন দিন থেকে আবার চলে যাইবেশ সুন্দর বাড়ি তো বাড়ির ভিতরে ঢুকেই সীমানার ভিতর একটা পুকুর দেখতে পেলাম। পুকুরে মাছ কিলবিল করছে। আমি পুকুরের দিকে ইঙ্গিত করে জিজ্ঞাসা করলাম এতো বড় বড় এগুলো কি মাছ কি ভয়ংকর দেখতে আমি চিনি না। 

পালতোআমরা ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম দেই। আমার ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি জারা আমার পায়ের কাছে বসে আছে৷ পরণে কালো সর্ট আর টিশার্ট। হাতে সিগারেট৷ আমি জারাকে সিগারেট খেতে দেখে খুব অবাক হলাম তুমি সিগারেটও খাও জারা  সূচক মাথা নেড়ে আমার দিকে একটা সিগারেট বাড়িয়ে দিয়ে বলল ড্রিঙ্ক করোএকবার করেছিলাম৷ 

কিন্তু জানোই তো আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। তাই ইচ্ছে হলেও করতে পারি না। আজ করবে আমি আরো অবাক হয়ে বললাম তুমি ড্রিংকও করো এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই। খুব অল্প বয়স থেকে করি।বলে জারা অন্য রুমে চলে গেলো।

কিছুক্ষণ পর দুইটা গ্লাস আর এক বোতল ভদকা নিয়ে ফিরে আসলো।বললে না তো কবে থেকে করো জারা গ্লাসে ভদকা ঢালতে ঢালতে বলল সে কথা বলতে হলে আগে একটা কাহিনি বলতে হবে।তাহলে বলো আমার দিকে গ্লাস বাড়িয়ে দিয়ে জারা বলতে লাগলো আমি যখন খুব ছোট। ধরো পাঁচ-ছয় বছর বয়স। 

তখন আমাদের বাসায় আমার আব্বুর এক বন্ধু প্রায় আসতো। আমাকে আদর করার ছলে আমার দেহের বিভিন্ন জায়গায় হাত দিতো। ব্যাপারগুলো আমার কাছে খুব খারাপ লাগতো। কিন্তু তখন তো আর এগুলো বুঝতাম না। 

ঐ আঙ্কেল আসলে বা আমাকে আদর করলে আমি খুব বিরক্ত হতাম৷ আমার ভালো লাগতো না৷ তারপরও সে আমাকে জোর করে আদর করতো৷ মূলত তিনি পেডোফেলিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন৷ মানে শিশুদের প্রতি যৌন আকৃষ্ট ছিলেন৷ ব্যাপারটা আমি বড় হয়ে বুঝতে পেরেছি৷ জারা থেমে আমার গ্লাসে মদ ঢেলে দিলো। 

তার এই কথাগুলো আমার ভিতরে সুঁচের মতো বিধলো। মনে হতে লাগলো সে যেনো আমার কাহিনিই বলছে। আমি অস্বস্তি অনুভব করতে লাগলাম। কিন্তু জারাকে বুঝতে না দিয়ে বললামএতো অল্প বয়স থেকে খাওধুর না।তাহলে যেদিন ঐ আঙ্কেলকে আমি আর দাদু মিলে মেরে মাগুর মাছের পুকুরে ফেলে দেই। 

সেদিন প্রথম দাদুর সাথে বসে ড্রিংক করি। জারা একটু থেমে আবার বলতে লাগলো অহ বলতে ভুলে গিয়েছিলাম সামনের পুকুরের মাছগুলো মাগুর মাছ। মানুষখেকো মাগুর।আমি আৎকে উঠলাম। কিন্তু কিছু বলার মতো শক্তি পাচ্ছি না। মেয়েটা খুন করেছে। 

আবার কী সহজে বলেও দিচ্ছে।ভাবতেই আমার গলা শুকিয়ে গেলো। ভিতর থেকে কথা বের হওয়া বন্ধ হয়ে গেলো।জারা আবার বলতে লাগলো আর সিগারেট খাওয়া শুরু হয় শহরে যাওয়ার পর থেকে। যখন কোনো পেডোফেলিককে দেখতাম।

তখন সহ্য করতে পারতাম না৷ তাদেরকে মাগুর মাছের খাদ্য বানানো পর্যন্ত তাদের কথা মনে পরলেই খুব রাগ হতো। রাগ কমানোর জন্য সিগারেট টানা শুরু করি। জারা ঠান্ডা মাথায় কথাগুলো বলতে লাগলো অহ আরেকটা কথা বলতে ভুলেই গিয়েছি, আমার মা আর সৎ বাবা মারা যাননি৷ 

তারাও মাগুর মাছের পেটে সংরক্ষিত আছে।ভয়ে আমার হাত কাপছে৷ আমি এতোদিন এমন ভয়ংকর একটা মানুষের সাথে ছিলাম। ভাবতেই শরীরে কাটা দিয়ে উঠলো। এখান থেকে এক দৌড়ে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করলো৷ কিন্তু উঠার জন্য এক বিন্দু শক্তি পাচ্ছি না। 

জারা আমার মুখের সামনে এসে বলতে লাগলো আমাকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কোনো লাভ নেই। তোমার গ্লাসে মেডিসিন দেয়া ছিলো। তোমার হাত-পা অবশ হয়ে আছে। তুমি চাইলেই তোমার হাত-পা নাড়াতে পারবে না।

কিন্তু জারা আমার কী দোষ আমাকে কেন মারতে চাচ্ছো আমার কপাল থেকে ঘাম জড়ছে।সেদিন জিজ্ঞাসা করেছিলে তোমার চেহারায় কি কোনো ভয়ংকর ভাব আছে কি না আমি বলেছিলাম ভয়ংকর ভাব নেই। কিন্তু পিশাচ পিশাচ ভাব আছে। 

তাই কোনো শিশুকে আদর করলে তারা বিরক্ত হয়৷ পালিয়ে যায়। কথাটা মজা করে বলেনি। তোমার চেহারায় সত্যিই পেডোফিল পিশাচের ভাব আছে। অনেকক্ষণ ধরে বাইরে ধুপধাপ ধুপধাপ শব্দ হচ্ছে। ভীষণ ভয় হচ্ছে তরণীর। 

রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা বাজছে। অথচ এখনো লোকটার ফেরার কোনো নাম নেই। সে কি জানেনা বৃষ্টি বাদলায় তরণীর জানের পানি শুকিয়ে যায় অজানা উৎস থেকে আসা শব্দটার ভয়ে সে ঠিকমতো টিনের চালে বৃষ্টি পড়ার শব্দটা উপভোগ করতে পারছেনা। দিনের বেলা হলেও একটা কথা ছিল। 

কাছে ফোন থাকলে একটা কল দিয়ে দেখা যেতো কতদূর আছে সে। গত আড়াই মাস ধরে ফোনটা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। লোকমান অনেকদিন ধরেই বলছে সেরে আনবে। কিন্তু সময় হয়ে উঠছেনা তার চিলেকোঠার এই ঘরটা তরণীই পছন্দ করেছিল। 

লোকমান বারবার বলেছিল অন্য বাসা দেখবে। একরুমের বাসায় থাকা সমস্যা হয়ে যাবে। তাও আবার ছাদের ওপর রুম। বাথরুমে যেতে হলে ঘর থেকে বেরিয়ে ছাদের অন্য কোণায় যেতে হয়। তরণীই জোর করে দেখতে দেয়নি অন্য বাসা। 

তার ভীষণ পছন্দ হয়েছিল এই চিলেকোঠার ঘর। এমনিতেই কোনো সমস্যা হয়না। কিন্তু বর্ষার দিনে বা কারেন্ট চলে গেলে তরণীর খুব ভয় করে। ইদানীং কারেন্টও বড্ড বেশি বিরক্ত করছে। কে জানে কখন হুট করে আবার চলে যায়। তরণী আল্লাহ আল্লাহ করছে কারেন্ট যাওয়ার আগেই যেন লোকমান চলে আসে। 

আজকাল সে লোকমুখে কানাঘুষা শুনতে পায় লোকমান নাকি খারাপ পাড়ায় যাতায়াত করে। এসব শুনলে তরণীর বুক ফেটে কান্না আসে। চিৎকার করে সবাইকে বলতে ইচ্ছে করে আমার স্বামী এমন না। সে খুব ভালো মানুষ। আমকে ভীষণ ভালোবাসে। 

তার উপার্জন কম হতে পারে কিন্তু চরিত্রে কোনো দাগ নেই। কথাগুলো বলা হয়ে ওঠেনা কাউকে। কী দরকার সবাইকে বিশ্বাস করানোর সে নিজে জানলেই হলো লোকমান কেমন মানুষ। এত ঢোল পিটিয়ে সবাইকে স্বীকারোক্তি দিতে হবে কেন ঘড়ির কাঁটা বারোটার ঘরে। 

নিশ্চয়ই আজও পার্ট টাইম করতে ব্যস্ত লোকটা। ভীষণ রাগ হচ্ছে তরণীর৷ ভাত তরকারি সব ঠান্ডা হওয়ার পথে। একসাথে খাবে বলে এখনো না খেয়ে আছে সে৷ এদিকে ধুপধাপ শব্দটাও বন্ধ হচ্ছে না। পাঁচ মিনিট পর শব্দটা হুট করে বন্ধ হয়ে গেলো। 

ঠকঠক করে দরজায় কড়া নাড়ছে কেউ। নিশ্চয়ই লোকমান চলে এসেছে৷ জানে পানি ফিরে এলো তরণীর। শোয়া থেকে উঠে বসে সে চাবি খুঁজতে লাগলো। ভয় হচ্ছিল বলে দরজা ভেতর থেকে তালা মেরে রেখেছিল। তরু ও তরু। দরজাটা খোলো। কাকভেজা হয়ে গেলাম যে।আসছি আসছি। 

একটু অপেক্ষা করুন। খুট করে দরজা খুলে গেলো। ইশশ ভিজে কী অবস্থা হয়ে গেছে লোকটার। তরণীর দিকে তাকিয়ে মাথার পানি ঝাড়তে ঝাড়তে সে মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলআজও তালা দিয়ে রেখেছিলে লোকমানের হাসিমাখা মুখটা দেখে তরণী চোখ ফিরিয়ে নিলো। পাছে না আবার নজর লেগে যায়। 

চেয়ারের ওপর থেকে তোয়ালেটা নিয়ে এগিয়ে দিতে দিতে সে জবাব দিলজানেনই তো ভয় পাই আমি। আর ছাদ থেকে কেমন একটা শব্দ আসছিল। অনেকটা অভিমান মেশানো গলা তরণীর। কিন্তু উপহারটা পেয়ে তরণীর সব অভিমান নিমিষেই পানি হয়ে যাবে লোকমান নিশ্চিত। সে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল তরণীকে। 

তারপর পকেট থেকে চেইনটা বের করে গলায় পরিয়ে দিয়ে নেশাক্ত কণ্ঠে বললরি সোনা বউ। একটা বাঁশ ছাদের রেলিংয়ের সাথে বাড়ি খাচ্ছিল বলে শব্দ হচ্ছিল। আমি সরিয়ে রেখে এসেছি। খুব ভয় পাচ্ছিল বুঝি আমার বউটাচমকে তরণী পেছনে ফিরে দাঁড়ালো। 

গলায় হাত দিয়ে দেয়ালো ঝুলানো ছোট আয়নার কাছে গিয়ে নিজেকে ঘুরেঘুরে দেখতে লাগলো৷একী স্বর্ণের চেইন হ্যাঁ। খুশি হয়েছো তুমি লোকমানের হাসি দেখে আবারও তরণীর বুকটা ধ্বক করে উঠল। এত সুন্দর করে একটা মানুষ কীভাবে হাসে?কোথায় পেলেন এটাতরণীর প্রশ্ন শুনে লোকমানের হাসি নিভে গেলো।

কোথায় পেলেন মানে তোমার কি মনে হয় আমি রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছি ছি ছি সে কথা কখন বললাম মানে এখন তো মাসের শেষ দিক ওটা নিয়ে চিন্তা কোরোনা। আমি টাকা গোছাচ্ছিলাম অনেক দিন ধরে।তরণীর চোখে পানি চলে এলো৷ 

এমন বৃষ্টি বাদলার দিনে নিজে একটা ছাতা না কিনে ভিজে চুপচুপা হয়ে বউয়ের জন্য চেইন নিয়ে এসেছে। এত বোকা হয় মানুষ সে অবশ্যই খুব দ্রুত টাকা জমিয়ে একটা ছাতা কিনে দেবে তাকে।রাতে লোকমানকে জড়িয়ে ধরে শুতে গিয়ে তরণীর চোখে আরো একবার পানি চলে এলো। 

মাঝেমধ্যে নিজের ভাগ্যের ওপরই তরণীর হিংসে হয়। আল্লাহ তার কপালে এত সুখ দিয়েছেন কেন এমন কোনো বৃষ্টির দিন যায়নি যেদিন লোকমান তার জন্য কোনো উপহার হাতে করে আসেনি। অন্য দিন যে আনেনা তা নয়। তবে বৃষ্টির দিনের উপহারগুলো খুবই স্পেশাল হয়। 

আবারও ভিজে উঠেছে তরণীর চোখ। সে আরো সরে এসে লোকমানের বুকে মুখ লুকিয়ে ফুঁপিয়ে উঠলো। দেখো কেমন বাচ্চাদের মতো ফোসফোস শব্দ করে ঘুমাচ্ছে এত বড় মানুষটা। তরণী ঘুমিয়ে পড়তেই লোকমান আস্তে করে গলা থেকে চেইনটা খুলে নিলো৷ বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে এখনো। 

সে সাবধানে দরজা খুলে ছাদে চলে এলো। তরণী জাগার আগেই বৃষ্টির পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে চেইনটা থেকে রক্তের দাগটুকু উঠিয়ে ফেলতে হবে। এত বড় কাঁচা কাজটা কীভাবে করতে পারলো সে কোনোদিন তো এমন ভুল হয়না। 

নিজের বোকামির ওপরই রাগ হচ্ছে তার। ভাগ্যিস তরণীর চোখে পড়েনি। এখনো উঠছেনা কেন দাগটা ঠান্ডায় কাঁপন ধরানো রাতেও কপাল ঘেমে উঠছে লোকমানের।